বুধবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

বাংলাদেশের চলচিত্র শিল্পের আসলে ভবিষৎ কোথায়? সাকিব খানের লিপস্টিক নিয়ে টানাটানি!! হারিয়ে যাচ্ছে একাত্তরের স্বাধীনতা।।

বাংলাদেশের চলচিত্র শিল্পের আসলে ভবিষৎ কোথায়? কোথায় আছে বাংলাদেশের চলচিত্র শিল্পের মান? এই এফ ডি সি থেকে একসময় ওরা এগারো জন, সংগ্রাম, হাঙ্গর নদীর গ্রেনেড এর মতো মুভি তৈরী হয়েছে। আজ সেই ইন্ডাষ্ট্রিতে এক সাকিব খান ছাড়া কোন নায়ক নেই। নেই কোয়ালিটি মুভি। মান্ধাতা আমলের ষ্টুডিও, বস্তা পঁচা স্ক্রিপ্ট, জঘন্য ডায়ালগ ছাড়া আর কি আছে সেখানে?
অনেক দিন পর একটা বাংলা মুভি দেখে ভালো লেগেছিলো, সেটা হলো গেরিলা। এর মাঝে ক্র্যাক প্লাটুন কে নিয়ে দ্বীপ নেভার আগে নামের একটা মুভি তৈরী হচ্ছিলো। সেটার কোন খবর জানা নেই। গানগুলো বেশ ভালো ছিলো। আমাদের ইন্ডাষ্ট্রিতে যে ভালো শিল্পী নেই তা নয়, কিন্তু তাদের উপযোগীতা নেই। নির্মাতারা একজন নিউকামার লেখক, পরিচালক কিংবা নায়ক কে সুযোগ দেয়ার চেয়ে সাকিব খানকে নিয়ে সেই বস্তা পচা টাইপের মুভি বানাতেই বেশি পছন্দ করেন। কেন, জানা নেই।
এর মধ্যে এম এ জলিল অনন্ত "খোঁজ দ্যা সার্চ" এবং "স্পিড" নামের দুইটি ছবি বানালেন। তার অভিনয় সম্পর্কে যথেষ্ট সমালোচনা হলেও এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে এটা একটা উদ্দীপক চেষ্টা ছিলো। অন্তত কেউ তো এগিয়ে এসেছে সমসাময়িক ধারার মুভির মধ্যে নতুন কিছু করার জন্য।
আমি একজন দর্শক হিসাবে আশা করবোই যে এমন একটা মুভি আসুক যেটাকে আমি মনোযোগ দিয়ে দেখতে পারবো। যে মুভি দেখে বিরক্তি তৈরী হয়, সেই মুভির স্বার্থকতা কোথায়? এটা নির্মাতাদের কে বোঝাবে?
হুমায়ুন আহমেদ এর সম্পর্কে যতো যাই হোক, এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে তিনি, নির্ঝর, অনন্ত দের মতো নির্মাতারা আছে বলে এখনো বাংলাদেশের সিনেমা ইন্ডাষ্ট্রি বেঁচে আছে। বাংলাদেশে এমন মুভি মনে হয় ২০ টার বেশি হবেনা যেখানে অ্যানিমেটেড স্পেশাল ইফেক্ট ব্যবহার করা হয়েছে। মাত্র কিছুদিন হলো আমাদের দেশে ডিজিটাল মুভি ফরম্যাট অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু এটার সেই তেল মারা মানসিকতার নির্মাতাদের কতোটুকু কাজে লাগবে সেটা একটা প্রশ্ন বটে।
আমি নিজেও যখন মুভি দেখতে বসি, তখন ইংলিশ মুভিটাকেই বেশি প্রাধান্য দেই। অথচ আমাদের পার্শ্ববর্তি দেশ ভারতের অর্থনীতির একটা বড় অংশ দাঁড়িয়ে আছে মুভি ইন্ডাষ্ট্রির ওপর। বাংলাদেশের যারা চলচিত্র শিল্পে নির্মাতা হিসাবে আসার সামান্য তম ইচ্ছে রাখেন, তারা অবস্থা দেখে মানে মানে কেটে পড়েন।
ট্যালেন্ট এর অভাব নেই, অভাব নেই যোগ্যতার। শুধু দরকার যথেষ্ট পৃষ্টপোষকতার। দরকার সরকারী সাহায্যের। আমাদের এফ ডিসিতে আরো উন্নত মানের ষ্টুডিও, ভালো মানের যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করা হলে, নব্য নির্মাতারা এগিয়ে আসতে সাহস পাবেন। বাংলাদেশে বহু বছর হলো আন্তর্জাতিক মানের কোন চলচিত্র হয়নি। জহির রায়হান রা যদি সেই সময় তখনকার প্রযুক্তিতে এতো ভালো কাজ উপহার দিতে পারেন, সেখানে এখনকার উন্নত প্রযুক্তিতে কেন আরো ভালো কাজ আমরা আশা করবো না?
আমি সপ্ন দেখি একদিন বাংলাদেশেও Tron Legacy কিংবা Terminator এর মতো মুভি তৈরী হবে। একদিন বাংলাদেশেও হলে দর্শক সমাগম হবে। একদিন আমিও বিদেশী বন্ধুদের কাছে গর্ব করে বলবো এই চলচিত্রটা বাংলাদেশে তৈরী। একদিন বাংলাদেশের চলচিত্র গুলো আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাবে। সেদিন আমিও বাহবা দিয়ে ফেসবুকে ষ্ট্যাটাস দেবো। সেদিন আমিও নিউজ এর লিঙ্ক দিয়ে ব্লগে লিখবো।
ক্যাটেগরি: চলচ্চিত্র
জসীম আহমেদ  (তোহিন) -এর বাংলা ব্লগ

1 টি মন্তব্য:

  1. সুন্দর একটি লেখা উপহার দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। বেঁচে থাকুক আপনার বাংলা ব্লগ হাজার হাজার বছর।

    উত্তরমুছুন